





নাটোরের আলোচিত কলেজশিক্ষিকা খাইরুন নাহার মৃত্যুর আগে তার আগের পক্ষের ছেলে সালমান নাফি বৃন্তের সঙ্গে ৪০ সেকেন্ড শেষবারের মতো কথা বলেন। পরে শিক্ষিকার স্বামী মামুনের সঙ্গেও কথা বলেন বৃন্ত।বৃন্ত জানান, যে রাতে আমার মা






মারা যায়, সেই রাতে ১১টার কিছু আগে আম্মুকে ফোন দিয়েছিলাম আমি। তিনি দুই পাওয়ারের আটটি (চলমান .৫ মাত্রার ৩২টি) ঘুমের ওষুধ খেয়েছিলেন বলে জানায় বৃন্তকে। এর বাইরে আর কথা বলতে পারেননি তিনি। বিষয়টি শোনার পর তিনি






মামুনকে ফোন দেন। এসময় মামুন বৃন্তকে জানায়, একটা কথা হলেই সে ঘুমের ওষুধ খায়, এসময় মামুন তাকে তার মায়ের সঙ্গে কথা বলার জন্য বলে। পরদিন সকালে মামুন ফোন করে তাকে জানায় তার মা আত্মহত্যা করেছেন।কলেজশিক্ষিকা






খায়রুনের আগের পক্ষে ছেলে সালমান নাফি বৃন্ত যিনি রাজশাহীর একটি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে লেখাপড়া করছেন। তিনি মোবাইল ফোনে চ্যানেল24কে অনলাইনকে আরও জানান, অনেকে মনে করেন আমার মাকে মার্ডার করা হয়েছে।,






তার মায়ের মৃত্যুর ব্যাপারে তার মন্তব্য কি জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার মাকে মার্ডার করা না হয়ে থাকলেও ও (মামুন) আত্মহত্যার জন্য উৎসাহ দিয়েছেন।মোটরসাইকেল কিনে দেয়ার প্রসঙ্গে তিনি জানান, আমার মা আমাকে মোটরসাইকেল
কিনে দিতে চেয়েছিলেন কিন্তু ও (মামুন) দিতে দেয়নি। এনিয়েই তাদের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল, সে রাতেও তাদের মধ্যে এ নিয়ে ঝগড়া হয়েছিল।কলেজছাত্র মামুনকে আটক করার পর থেকে আহাজারি করছে তার পরিবার।
মামুনের বোন বলেন, ‘আমার ভাই এবং ভাবির মধ্যে আমরা কখনও ঝগড়া দেখি নাই। আমার ভাবীর বাপের বাড়ির চাপ ছিল আর তার আগের পক্ষের ছেলে পাঁচ লাখ টাকা ও একটি বাড়ি চেয়েছিল। আমার ধারণা এই নিয়ে মনোমালিন্য করে তিনি (ভাবি) আত্মহত্যা করেছেন।
মামুনের বাবা বলেন, ‘আমার ছেলে বিয়ে করে আনার পর আমরা মেনে নেই, ওরা সুখেই সংসার করছিল। আমার ছেলে অনেক ভালো ওর এমন কিছু করা সম্ভব না।’
এছাড়াও তার প্রতিবেশী-বন্ধুরা জানান, মামুন এমন ছেলে না। তার নামে নেশা সম্পর্কে যা বলা হচ্ছে সেসব মিথ্যা। যে অপরাধের সন্দেহে তাকে আটক করা হয়েছে তা সে করতে পারে না, দ্রুত তাকে ছেড়ে দেয়া হোক।
নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা এ বিষয়ে গণমাধ্যমে বলেন, মামুনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেছে, তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের ছিল না। খায়রুন নাহার তার বড় ছেলেকে মোটরসাইকেল কিনে দেয়ার জন্য দুই লাখ টাকায় মামুনের সম্মতি চান। মামুন ওই টাকা না দেয়ায় তাদের মধ্যে ঝগড়ার একপর্যায়ে মামুন রাগ করে রাত ২টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। পরে ভোর ৬টার দিকে বাড়ি ফিরে দেখেন খায়রুন নাহার সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। খায়রুন নাহারের কাছ থেকে টাকা নিয়ে মামুন নামেমাত্র ব্যবসা করতেন।
এদিকে গত রোববার (১৪ আগস্ট) রাতে কলেজ শিক্ষিকার চাচাতো ভাই সাবের উদ্দিন বাদী হয়ে থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেন। মামলায় কাউকে অভিযুক্ত না করায় মামুনকে ৫৪ ধারায় আটক দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালতে জামিন নামঞ্জুর করে জেলা হাজতে পাঠায়।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর কাজী অফিসে গিয়ে কলেজছাত্র মামুন ও শিক্ষিকা খায়রুন নাহার বিয়ে করেন। বিয়ের আট মাস পর বিষয়টি জানাজানি হয়। রোববার (১৪ আগস্ট) সকালে নাটোর শহরের বলারিপাড়া এলাকার ভাড়া বাসা থেকে শিক্ষিকার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।