ম্যাচের মাঝামাঝি সময়ে স্টেডিয়ামের প্রধান ফটকের দিকে যেতে দেখা মেলে কাবলি পরা এক আফগান সমর্থকের। অ্যাম্বুলেন্সের সামনে দাঁড়িয়ে টিসু দিয়ে নাক-মুখের রক্ত মুছছেন বারবার। কর্তব্যরত নিরাপত্তারক্ষী জানালেন, গ্যালারিতে মারামারি করে তার এই অবস্থা।






গ্যালারির এই উত্তাপ যেন ছড়িয়ে পড়ে মাঠেও। ১৯তম ওভারের চতুর্থ বলে ছক্কা মেরে পরের বলেই আউট হন আসিফ আলী। সঙ্গে সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন বোলার ফরিদ আহমেদ ও আসিফ। পরে সতীর্থরা এসে দুজনকেই থামান। আর পাকিস্তানের জয় নিশ্চিতের পর চলে আফগানি দর্শকের অরাজকতা।






১৯তম ওভারের পঞ্চম বলে আসিফের আউটে আফগানিস্তান সমর্থকরা জয় ধরেই নিয়েছিল। তখন পাকিস্তানের বাকি ছিল ১ উইকেট! ক্রিজে দুই পেসার নাসিম শাহ এবং মোহাম্মদ হাসনাইন। গ্যালারি কাঁপছিল আফগান হুঙ্কারে, কাবুলি গর্জনে। কিন্তু নাসিম শাহ যে মুদ্রার উলটোপিঠ দেখিয়ে দেবেন, সেটি তারা ঘুণাক্ষরে ভাবনেনি, অবচেতন মনে কল্পনাও করতে পারেননি।






ফজল হক ফারুকিকে মারা লং অফে নাসিমের ছয় বাউন্ডারির বাইরে আছড়ে পড়তেই উল্লাসে ভেসে ওঠে পাকিস্তান শিবির। হতবাক আফগানিরা যেন মেনে উঠতে পারেননি। তাইতো শারজার গ্যালারিতে মেতে ওঠেন চেয়ার ছোড়া-ছুড়িতে। পাকিস্তানি দর্শক দেখলেই যেন আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন আফগানিরা।






কয়েকজনকে চেয়ার দিয়ে বাড়ি দিতেও দেখা যায়। সেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও।বুধবার শারজায় এশিয়া কাপের সুপার ফোরের পাকিস্তান-আফগানিস্তান ম্যাচে উত্তাপ ছড়াবে অনুমিতই ছিল। এক ম্যাচ জিতে পাকিস্তান সুবিধাজনক অবস্থানে থাকলেও আফগানিস্তানের জন্য ছিল বাঁচামরার লড়াই। জিতলে টুর্নামেন্টে টিকে থাকবে আর হারলে বাদ।






ব্যাট হাতে আফগানিস্তান আগে ব্যাটিং করে ৮ উইকেটে ১২৯ রান করে। রান তাড়া করতে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে পাকিস্তান। ম্যাচ একবার আফগানদের দিকে হেলে আরেকবার পাকদের দিকে। ফারুকি-রশিদরা দারুণ বোলিং করে ভীষণ চাপে রেখেছিলেন পাকিস্তানকে।
কিন্তু দুর্ভাগ্য শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি হাতছাড়া হয়ে যায় শেষ ওভারের প্রথম দুই বলে নাসিমের দুই ছক্কায়।১ উইকেটে জিতে এশিয়া কাপের ফাইনাল নিশ্চিত করে পাকিস্তান। ছিটকে যায় আফগানিস্তান। সঙ্গে নিয়ে যায় ভারতকেও। ১১ সেপ্টেম্বর দুবাইয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ফাইনালে লড়বে পাকিস্তান।
প্রতিবেশী দেশ হলেও দুই দলের সমর্থকদের সম্পর্ক যেন দা কুমড়ার মতো। ম্যাচের আগে পরে সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলে এমন আঁচ পাওয়া যায়। ম্যাচেতো সেটি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নেয়।