পুরোনো কৌশলে নতুন এক অ’স্ত্র নিয়ে এগোচ্ছেন হাথুরুসিংহে

তামিম ইকবাল ২ রানে কট বিহাইন্ড হয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরছিলেন। ম্যাচ আদলের অনুশীলন হওয়ায় হয়তো আরেকবার ব্যাটিং করার একটা ইচ্ছা ছিল তাঁর। নিজেদের মধ্যে ম্যাচ হলে এ রকম

ঘটনা তো ঘটেই থাকে। কিন্তু চন্ডিকা হাথুরুসিংহে কী মনে করে সে সুযোগ দিলেন না বাঁহাতি ওপেনারকে। ড্রেসিংরুম থেকে বেরিয়ে সোজা ইনডোরে নেট ব্যাটিং প্র্যাকটিসের জন্য পাঠিয়ে দেন

তামিমকে। কোচের নির্দেশনা বিনাবাক্যে মেনে নিয়ে ইনডোরে চলেও যান ওয়ানডে অধিনায়ক। তামিমের মতো একজন সিনিয়র ক্রিকেটারকে এভাবে ইনডোরে পাঠানো কোচের ভুল না ঠিক-

এ নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। অধিনায়কের মনেও অভিমানের মেঘ জমতে পারে হাথুরুসিংহের কড়াকড়িতে। কিন্তু কোচের দৃষ্টিকোন থেকে দেখলে ভুল বোঝাবুঝির কোনো অবকাশ নেই। নেট

সেশন করে ব্যাটিংয়ে ত্রুটিমুক্ত হয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ খেলতে পারলে তামিমেরই লাভ। স্টিভ রোডস বা রাসেল ডমিঙ্গোদের সঙ্গে চন্ডিকা হাথুরুসিংহের কোচিং দর্শনে বড় পার্থক্য

এখানেই। ডমিঙ্গোরা ড্রেসিংরুমে স্বাগত জানাতেন তামিমকে। বিপিএল খেলে টি২০ ক্রিকেটের মুডে থাকা মুশফিকুর রহিমও রান পাননি ম্যাচ অনুশীলনে। ৬ রানে আউট হয়ে তিনি

অবশ্য কোচকে কিছু বলারই সুযোগ দেননি। মাঠ থেকে সোজা দৌড়ে চলে গেছেন ইনডোরে ব্যাটিং সেশন করতে। হাথুরুসিংহে প্রধান কোচের দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার পর থেকে শুধু ক্রিকেটারদের

মধ্যেই নয়, কোচিং স্টাফের কার্যক্রমেও পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গতকালের ম্যাচ আদলের অনুশীলনে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেন পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ড, ব্যাটিং কোচ জেমি

সিডন্স, ফিল্ডিং কোচ ম্যাক ডারমটরা। তবে কি ক্রিকেটারদের মতো কোচদেরও রোল ভাগ করে দিয়েছেন হাথুরুসিংহে? খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোচিং স্টাফের সদস্যদেরও তৎপর হওয়ার

নির্দেশনা গেছে প্রধান কোচের দিক থেকে। হাথুরুসিংহে ক্রিকেট মাঠের কড়া হেড মাস্টার হিসেবেই পরিচিত। ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তা দেখে অভ্যস্থ খেলোয়াড়রাও। দেশসেরা

ক্রিকেটারকেও স্ট্যাট দেখিয়ে দেন, ভুল ধরিয়ে দেন তিনি। সেরা কম্বিনেশন বেছে নিতে ব্যাটারদের পছন্দের চেয়েও কার্যকারিতাকে গুরুত্ব দেন এ লঙ্কান। গতকাল থেকে জাতীয় দলের

অফিসিয়াল অনুশীলন শুরুর পর সেই কাজটিই করছেন তিনি। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে শেরেবাংলা স্টেডিয়ামেই ক্রিকেটারদের কার্যক্রম শুরু হয়ে শেষ হয় সন্ধ্যায়। টিম মিটিং দিয়ে দিনের

কার্যক্রম শুরু। ভিডিও বিশ্নেষণ করে ব্যাটারদের আউটের ধরন দেখিয়ে দেন তিনি। বিশ্নেষণ পর্বে সমাধানের পথও বাতলে দেন কোচ। এই স্টাডিটা অস্ট্রেলিয়া থেকে করে এসেছেন হাথুরুসিংহে।

সিরিজ শুরুর আগে যাতে কার্যকর অনুশীলন করাতে পারেন। এখানেই শেষ নয়, ইংলিশদের বিপক্ষে হোম সিরিজে অনুকূল কন্ডিশন তৈরি করার জন্য কিউরেটর গামিনি ডি সিলভাকে নির্দেশনা

দিয়ে রেখেছেন। জোফরা আর্চারদের গতির বল ব্যাটাররা যাতে সহজে খেলতে পারেন, সেরকম উইকেটই চেয়ে রেখেছেন কোচ। কাটগ্রাস উইকেট প্রস্তুত করছেন কিউরেটর। কাটা ঘাস পিচের

ওপর ছিটিয়ে রোল করতে দেখা গেছে বুধবার। মাঠের ভেতরে ত্রিপল বিছিয়ে কাটা ঘাস রোদে শুকিয়ে রাখা হয়েছে স্টোর রুমে। শুকনো ঘাসে কী হবে- জানতে চাওয়া হলে গামিনি জানান, উইকেট

ইভেন করতেই ঘাস ছিটানো। বিদেশি দলের বিপক্ষে হোম সিরিজে কাটগ্রাসের উইকেট ব্যবহার করা হাথুরুসিংহের পুরোনো কৌশল। এবারও যে ব্যতিক্রম হবে না বুধবারের অফিসিয়াল

সংবাদ সম্মেলনেই পরিস্কার করে দিয়েছেন তা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *