




ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। জাতীয় দলের এই তরুণ তারকা ব্যাটসম্যান তিন ম্যাচের সিরিজে সর্বোচ্চ ১৪৪ রান করে সিরিজ সেরা হন।মঙ্গলবার মিরপুরে ১৬ রানের জয়ের ম্যাচে





৪৭ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন শান্ত। এদিন জয়ের পর সাংবাদিকদের শান্ত বলেন, আল্লাহকে ধন্যবাদ। এভাবে সিরিজ জিততে পারাটা দারুণ। কোচিং স্টাফ ও খেলোয়াড়দের বিশেষ ধন্যবাদ। নাজমুল হোসেন শান্ত ছিলেন দল থেকে





বাদ পড়ার দ্বারপ্রান্তে, তাকে নিয়ে আশা হারিয়েছিলেন সমর্থকদের অনেকেই, এমনকি কেউ কেউ বলছিলেন, নাজমুল হোসেন শান্তকে যে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, সেটা অন্যায্য এবং নির্বাচক কমিটি এই আস্থার প্রতিদান পাবে না।





ক্রিকেট বিশ্লেষকরাও শান্তকে দলে নেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তখন। কেউ কেউ তাকে ফেলেছিলেন বাতিলের খাতায়।তবে পরবর্তীতে মিনহাজুল আবেদীন নান্নুর নেতৃত্বাধীন জাতীয় দলের নির্বাচক কমিটি তাদের আস্থার প্রতিদান





পেলেন সম্ভবত সবচেয়ে সুমিষ্ট প্রক্রিয়ায়।নাজমুল হোসেন শান্ত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে যে কোনও ফরম্যাটে বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ জয়ের ম্যান অফ দ্য সিরিজ। একই সঙ্গে বড় ব্যবধানে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।এতোদিন যে উন্নতির কথা





নির্বাচকরা বলছিলেন, যে সক্ষমতার কথা বলছিলেন টিম ম্যানেজমেন্ট, সেটার প্রতিফলন মাঠে দেখিয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত।শান্ত যে পারেন, সেটা ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকেই প্রমাণ দিচ্ছেন, যেখানে





বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান ছিল তার, বিশ্বকাপের সেরা পাঁচ রান সংগ্রাহকদের একজন হিসেবে ভিরাট কোহলিদের পাশে নাম লিখিয়েছিলেন এই ওপেনার।বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিকেএসপির ক্রিকেট কোচ এবং
সাকিবসহ বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন সিনিয়র ক্রিকেটারদের মেন্টর নাজমুল আবেদীন ফাহিমের মতে, ‘শান্ত ছোটখাটো কিছু টেকনিক্যাল বিষয় নিয়ে কাজ করেছে, তারই ফল সে এখন পাচ্ছে।’নাজমুল আবেদীন ফাহিম মনে
করেন, শান্ত’র সবচেয়ে বড় গুণ সে মানসিকভাবে শক্তিশালী। এটা অনেক ক্রিকেটারের বেলায় ঘটে না।শান্তকে নিয়ে যেভাবে সমালোচনা হয়েছে এটা সামলানো কঠিন। তবে শান্ত এটাকে দারুণভাবে সামলেছেন বলে মনে করেন কোচ
নাজমুল আবেদীন ফাহিম।তিনি বলেন, এতো কিছুর পরেও মানসিকভাবে কখনো ভেঙ্গে পড়েনি। এটা একটা ইঙ্গিত যে শান্ত ধীরে ধীরে বাংলাদেশের ক্রিকেটের গুরুত্বপূর্ণ একজন চরিত্র হয়ে উঠবেন। ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক
ও ধারাভাষ্যকার নাসের হুসেইনের মতে, শান্ত ধীরে ধীরে বাংলাদেশের তারকা হয়ে উঠছেন।শান্ত এখন টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি তিন ফরম্যাটেই বাংলাদেশের জাতীয় দলে নিয়মিত থাকবেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
মাত্র ১৮টি ওয়ানডের ক্যারিয়ার নাজমুল হোসেন শান্তর, কিন্তু এরই মধ্যে তার সাফল্য ও ব্যর্থতা নিয়ে হয়েছে তুমুল বিশ্লেষণ।আঠারো ম্যাচে তিনবার ০, ছয় ম্যাচে ১০ এর নিচে রান করেছেন শান্ত।ওয়ানডে ফরম্যাটে সাড়ে
চার বছর আগে অভিষেক হয়েছিল তার, শান্ত তার প্রথম অর্ধশতক পেয়েছেন এই মাসের এক তারিখ।এখন তার ক্যারিয়ারে দু’টো ওয়ানডে ফিফটি, দু’টিই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে।গত চার বছরে শান্ত জাতীয় দলে থিতু হতে যে সময়
কাটিয়েছেন, তাতে অনেক ক্রিকেটারই অসহায় বোধ করতেন কিন্তু শান্ত নিবেদিত ছিলেন বলেই বিশ্বাস করেন নাজমুল আবেদীন ফাহিম।শান্ত ২০১৬ সালের অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের সেরা পারফর্মারদের একজন ছিলেন, তখনই মনে
করা হতো, তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ ‘কান্ডারী’ হতে যাচ্ছেন।তাই পরের বছরই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে শান্ত ডাক পেয়েছিলেন এবং টেস্ট ক্রিকেটে এখন শান্ত’র দু’টি সেঞ্চুরি, দু’টিই দেশের বাইরে এবং তিনটি ফিফটি।
শান্ত নিয়মিত রান পাননি এটা সত্য, কিন্তু ম্যাচে পুরোপুরি নিয়োজিত ছিলেন, ফিল্ডিংয়েও তার অবদান চোখে পড়ার মতো।একজন ক্রিকেটার যখন ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এসে প্রত্যাশিত
সফলতা পান না, তখন তিনি বোঝেন স্কিলই বড় কথা নয়, এখানে বড় ব্যাপার মানসিকভাবে শক্তিশালী হওয়া।ফাহিমের মতে, ‘শান্ত’র মধ্যে এই উপাদানগুলো আছে। তিনি নিজের দুর্বলতা জানেন এবং সেটা নিয়ে কাজ করেন। এটা বড় ক্রিকেটারের লক্ষণ।’