বিশ্ব ক্রিকেট ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে ! অন্য দলকে হারিয়ে বিশ্বকে চমকে দিয়েছে বাংলাদেশ!

এমন পাঁচটি ম্যাচের বর্ণনা যার উল্লেখ বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে দুই দশকেরও বেশী সময় ধরে টেস্ট সদস্য হলেও বাংলাদেশ এখনও নিয়মিতভাবে শক্তিশালী দেশের বিরুদ্ধে সিরিজ খেলার সুযোগ পায় না।সযোগ

পেলেও প্রতিপক্ষর পারফর্ম্যান্সের সঙ্গে তালে তাল মিলিয়ে ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করতে পারে না। তবে তার মধ্যেও বাংলাদেশ তাদের ক্রিকেট ইতিহাসে এমন কিছু জয় অর্জন করেছে যার মাধ্যমে আন্তর্কাতিক ক্রিকেট বিশ্বে তারা সমীহ

আদায় করে নিয়েছে। ১৯৯৯ ওডিআই বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারিয়ে সাড়া ফেলে দেওয়া বাংলাদেশ বিগত পনেরো বছরে বেশ কিছু স্মরণীয় ম্যাচ জিতেছেযেখানে তারা প্রতিপক্ষর সঙ্গে সমানে-সমানে টক্করই দেয়নি শুধু, বরং বিশাল

ব্যবধানে ম্যাচ জিতে আধিপত্য বিস্তার করেছে। এর মধ্যে বেশ কিছু জয় যেমন এসেছে ঘরের মাঠে, তেমন বিদেশের মাঠেও বাংলাদেশের দাপুটে জয়ের নমুনাও আছে। এখানে আমরা দেখে নেব বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের এমন পাঁচটি

জয় যেখানে প্রতিপক্ষ তৎকালীন সময়ে ও পরিস্থিতিতে বেশ শক্তিশালী হলেও তাদের বিপর্যস্ত করে হারাতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ।৫) বাংলাদেশ বনাম ভারত, ২০০৭ ক্রিকেট ওয়ার্ল্ড কাপ, বাংলাদেশের জয় ৫ উইকেটে ২০০৭ ওডিআই

বিশ্বকাপে ভারত বেশ অভিজ্ঞ দল নিয়ে এসেছিল। ব্যাটিং লাইন-আপে সচিন তেন্ডুলকার, সৌরভ গাঙ্গুলী, বীরেন্দর সেহওয়াগ, রাহুল দ্রাবিড়, যুবরাজ সিংদের মতো তারকারা থাকা সত্ত্বেও কুইন’স পার্ক ওভালের একটি মন্থর পিচে ভারত

রান তুলতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছিল। তার উপর প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ভারত নিজেদের আরও অপকার ডেকে আনে।মাঝের ওভারে বাঁ-হাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক ৩৮ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে ভারতের রানের গতি নিয়ন্ত্রণে

রাখেন। অন্যদিকে, মাশরাফি মোর্তাজা নতুন বলে দুই উইকেট ও ডেথ ওভারে দুই উইকেট নিয়ে ভারতকে মাত্র ১৯১ রানে অল আউট করতে অবদান রাখেন।ভারতের হয়ে সৌরভ গাঙ্গুলী ১২৯ বলে ৬৬ রান করে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে তামিম ইকবাল আগ্রাসী ইনিংস খেলে ভারতকে ম্যাচ থেকে ক্রমশ দূরে সরিয়ে দিচ্ছিলেন। তিনি ৫৩ বলে ৫১ রানের একটি ঝকঝকে ইনিংস খেলার পরে দুই উনিশ বছর বয়সী ব্যাটার মুশফিকুর রহিম ও শাকিব আল

হাসান যথাক্রমে ৫৬* ও ৫৩ রান করে বাংলাদেশকে ৫ উইকেটে ম্যাচ জিততে সাহায্য করেন। এই জয়ের ফলে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ওডিআই বিশ্বকাপের নক আউট পর্বে যাওয়ার যোগ্যতা লাভ করে।৪) ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম বাংলাদেশ,

২০০৭ টি-২০ ওয়ার্ল্ড কাপ, বাংলাদেশের জয় ৬ উইকেটেটি-২০ বিশ্বকাপের প্রথম সংস্করণে প্রায় সব দেশই প্রতিপক্ষ সম্বন্ধে খুব কম ধারণা নিয়েই খেলতে এসেছিল কারণ ফর্ম্যাটটি খেলা শুরু হয়েছিল মাত্র ২ বছর আগে। ক্রিস গেইল, মার্লন

স্যামুয়েলসের মতো বেশ কিছু বিগ-হিটারসমৃদ্ধ ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে হারার পরে জোহানেবার্গে বাংলাদেশের মুখোমুখি হয়েছিল। তবেবাঁ-হাতি মিডিয়াম পেসার সৈয়দ র‍্যাসেল প্রথম ওভারেই

গেইলকে আউট করে টাইগার্সদের একটি অনবদ্য সূচনা এনে দেন। এরপর শিবনারায়ণ চন্দ্রপল ও ডেভন স্মিথ ইনিংস গড়ার কাজ করলেও দ্রুত গতিতে রান করা সম্ভব হচ্ছিল না। শাকিব আল হাসান ৪ উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মিডল

অর্ডারকে ভাঙেন। শেষের দিকে ডোয়েন স্মিথ ৭ বলে ২৯ রানের ইনিংস খেললেও ওয়ান্ডারার্সের পাটা পিচে ১৬৪/৮-এর বেশী তুলতে পারেনি ক্যারিবিয়ানরা।দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও নাজিমউদ্দিন পাওয়ারপ্লের মধ্যেই আউট হলেও

আফতাব আহমেদ ও অধিনায়ক মহম্মদ আশরাফুল বিস্ফোরক ব্যাটিং করতে থাকেন রবি রামপল, ডোয়েন ব্রাভোদের বিরুদ্ধে। ২৭ বলে ৬১ রান করে আশরাফুল ম্যাচের সেরা হন। অন্যদিকে, আফতাব আহমেদ ৪৯ বলে ৬২ রানে

অপরাজিত থেকে দুই ওভার হাতে রেখে দলকে জয় এনে দেন এবং টি-২০ বিশ্বকাপের প্রথম আবির্ভাবেই বাংলাদেশ সুপার ৮ পর্বে যাওয়ার যোগ্যতা লাভ করে।৩) বাংলাদেশ বনাম ইংল্যান্ড, ২০১৬ টেস্ট, বাংলাদেশের জয় ১০৮ রানে

মীরপুরের একটি স্পিন-সহায়ক পিচে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করে বাংলাদেশ ২২০ রান তোলে। তামিম ইকবাল ১০৪ রান করে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও, মোমিনুল হকের ৬৬ রান ছাড়া অন্য কোন ব্যাটার বিশেষ সুবিধা করতে পারেননি

মইন আলির সামনে। ইংল্যান্ডের অফ স্পিনার ৫৭ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন।ইংল্যান্ডের টপ অর্ডারও বাংলাদেশের স্পিনারদের সামলাতে অসুবিধায় পড়ছিলেন এবং জো রুট ছাড়া কেউ হাফ সেঞ্চুরিও করতে পারেননি। যদিও লোয়ার অর্ডারে

ক্রিস ওকস ও আদিল রশিদের মধ্যে ৯৯ রানের কার্যকরী পার্টনারশিপ সফরকারী দলকে লিড নিতে সাহায্য করেছিল। মেহেদি হাসান মিরাজ ৬ উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডকে সীমাবদ্ধ রাখেন ২৪৪ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসেও তামিম ইকবাল (৪০) ভালো ফর্ম বজায় রাখেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *