




বাংলাদেশের কিংবদন্তি অভিনেতা হুমায়ুন ফরিদী । ১৯৫২ সালের এই দিনে ঢাকার নারিন্দায় জন্ম নেওয়া ফরিদী মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তুমুল খ্যাতি অর্জন করেন।জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি বিষয়ে





স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী ফরিদী বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে বিশিষ্ট নাট্যকার সেলিম আল-দীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তিনি অসংখ্য জনপ্রিয় মঞ্চ, টিভি নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শিল্প-সংস্কৃতিপ্রেমীদের হৃদয়ে আসন গেড়ে নেন।





১৯৬৪ সালে মাত্র ১২ বছর বয়সে কিশোরগঞ্জের মহল্লার নাটক ‘এক কন্যার জনক’-এ প্রথম অভিনয়ে করেন হুমায়ুন ফরিদী। ১৯৭৬ সালে নাট্যজন সেলিম আল দীন-এর উদ্যোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয় নাট্যোৎসব।





ফরিদী ছিলেন এর অন্যতম প্রধান সংগঠক। এই উৎসবে ফরিদীর নিজের রচনায় এবং নির্দেশনায় মঞস্থ হয় ‘আত্মস্থ ও হিরন্ময়ীদের বৃত্তান্ত’ নামে একটি নাটক। ওই সময় নাটকটি সেরা হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল।ঢাকা থিয়েটার এ শকুন্তলা,





ফণীমনসা, কীত্তনখোলা, কেরামত মঙ্গল, মুনতাসীর ফ্যান্টাসি, ভূতের মতো তুমুল জনপ্রিয় মঞ্চ নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে ফরিদী হয়ে ওঠেন ঢাকা থিয়েটারের প্রাণ ভোমরা। বনে যান সেসময়ের মঞ্চ নাটকের অদ্বিতীয় ব্যক্তি। নাট্যপাড়ায়





হুমায়ূন তখন শক্তিমানদের একজন।আতিকুল ইসলাম চৌধুরীর ‘নিখোঁজ সংবাদ’র মধ্য দিয়ে টিভি পর্দায় আগমন তার। তবে ১৯৮৩ সালে সেলিম আল দীনের রচনা এবং নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর পরিচালনায় সেই সময়কার জনপ্রিয়





নাটক ‘ভাঙনের শব্দ শুনি’তে টুপি দাড়িওয়ালা গ্রামের মিচকা শয়তান সেরাজ তালুকদারের যে চারিত্রিক রূপ তিনি দিয়েছিলেন আর সেই নাটকে তার সেই সংলাপ ‘আরে আমি তো পানি কিনি, পানি, দুধ দিয়া খাইবা না খালি খাইবা বাজান’
বেশ শ্রোতাপ্রিয় হয়ে উঠেছিলো।এরপর একে একে করেছেন হঠাৎ একদিন, দূরবীণ দিয়ে দেখুন, কোথায় কেউ নেই, বকুলপুর কতো দূর, ভবের হাট, এরকম আরো অসংখ্য অগনিত তুমুল দর্শকপ্রিয় টিভি নাটক।হুমায় ফরিদি তার মৃত্যুর
এক বছর আগে বাংলাদেশের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে নিয়ে করে গিয়েছিলেন এক অসাধারন উক্তি যা আমরা অনেকেই আজ ভুলে গেছি। সময়টি ছিল ২০১১ বিশ্বকাপ চলাকালীন, পত্রিকায় সাকিব আল হাসান তার কলামে সাবেক
খেলোয়াড়দের এবং দর্শকদের সমালোচনা করেছিলেন।কাজী সাবির তখন বাংলাভিশনে বিশ্বকাপ নিয়ে একটা ডেইলি শো হোস্ট করে। বয়স কম ছিল, সাকিবকে নিয়ে মনে যা আসলো বলে গেলাম শো’তে। ভাগ্য ভাল সোশাল মিডিয়ার যুগ ছিল না।
পরের দিন হুমায়ুন ফরীদি আমাকে বললেন, ‘তোমার শো দেখলাম, সাকিবকে নিয়ে এইভাবে তোমার বলা ঠিক হয় নাই!’ আমি নিজের পক্ষে যুক্তি দেয়ার চেষ্টা করলাম। উনি বলেছিলেন- ‘শোনো, সাকিব এত প্রতিভাধর যে ওকে
বুঝার ক্ষমতা এখনও তোমার হয় নাই।তোমাদের মনে হয় ওর মধ্যে কোন বিনয় নেই। বিনয় না থাকলে এত বড় জায়গায় পৌঁছানো সম্ভব না। কখনো যদি ওই জায়গায় পৌঁছাতে পারো তাহলে বুঝবা, সাকিবের বিনয়টা কোথায়!
আমি উত্তরে বলেছিলাম- ‘তাহলে তো আমি কোনদিনও সাকিবকে বুঝতে পারবো না।’ এরপর ওনার সেই বিখ্যাত দরাজ হাসি। তিনি ক্রিকেট অনেক ভালো বুঝতেন, ভালবাসতেন, আর খেলোয়াড়দের অনেক সম্মান করতেন।