সিরিজ হারলেও টাইগারদের নিয়ে যে আশা করেন এই চারজন

ওয়ানডে ক্রিকেটে সমীহ জাগানিয়া দল বাংলাদেশ। নিজ দেশে খেলা হলেতো রীতিমতো অজেয় বলা যায় তাদের। প্রায় এক দশক ধরে ঘরের মাঠকে দুর্গ বানিয়ে ফেলা বাংলাদেশ দল সাফল্য পায়নি শুধু ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ২০১৪

সালের জুনের পর বাংলাদেশের মাটিতে ওয়ানডে সিরিজ জয়ী একমাত্র দল ইংল্যান্ড। এবারো নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রেখেছে একদিনের ক্রিকেটের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। টানা দুই জয়ে স্বাগতিকদের বিপক্ষে সিরিজ জয়। যদিও শেষটা

রাঙিয়েছে তামিম ইকবালরা। ঘরের মাঠে প্রিয় ফরম্যাটেও টানা হারে সিরিজ হাতছাড়া। বিশ্বকাপের ঠিক আগমুহূর্তে টাইগারদের এমন পারফরম্যান্সেও ইতিবাচক ফল খুঁজে পেয়েছেন দেশের সাবেক ক্রিকেটাররা। সিরিজ হারলেও

বাংলাদেশ দল নিয়ে আশাবাদী তারা।গতকাল (৬ মার্চ) শেষ ওয়ানডেতে জয়ের মাধ্যমে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ শেষ করেছে বাংলাদেশ। তবে প্রথম দুই ম্যাচে হেরে তামিম ইকবালের দল আগেই সিরিজ থেকে ছিটকে যায়।

ফলে দেশের মাটিতে নিজেদের পছন্দের ফরম্যাটটিতে আবারও সিরিজ হেরেছে তারা। এরপর তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে সফরকারী ইংলিশদের আতিথ্য দেবে সাকিব আল হাসানরা।
ওয়ানডে সিরিজ শেষে ক্রিকেটারদের পূর্ণাঙ্গ

পারফরম্যান্স নিয়ে ঢাকা পোস্টের সঙ্গে কথা বলেছেন সাবেক ক্রিকেটার ও বিসিবি পরিচালক কর্মকর্তা আকরাম খান, নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাক, দলের বাইরে থাকা ক্রিকেটার মোহাম্মদ আশরাফুল এবং মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।

সিরিজ জিততে না পারার আক্ষেপ নিয়ে আশরাফুল জানান, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা প্রথম ম্যাচে হেরে গেছি। সব মিলিয়ে ২০ রান কম করলেও আমাদের বোলারদের চমৎকার পারফরম্যান্স ছিল। এক ম্যাচ বাদ দিলে,

ওভারঅল সিরিজে বোলাররা ভালো করেছে। আর ব্যাটাররা সেট হয়েও বড় ইনিংস খেলতে পারেনি। এছাড়া সবকিছু ঠিক ছিল।’তৃতীয় ম্যাচে সাকিবের অলরাউন্ড নৈপুণ্যের কথা উল্লেখ করে এই ক্রিকেটার বলছেন, ‘সাকিবকে পাওয়াটাই

ভাগ্য। আমাদের দেশে ও জন্মগ্রহণ করেছে আর আমরা তাকে পেয়েছি। ব্যাট-বলে সবমিলিয়ে সাকিব অসাধারণ।’সিরিজ হারলেও বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বর্তমান পারফরম্যান্স নিয়ে আশাবাদী বিসিবি পরিচালক আকরাম খান। সাবেক

এই অধিনায়ক ঢাকা পোস্টকে বলেছেন, ‘আমাদের প্রথম ম্যাচটা হারলেও, আমরা কিন্তু ডমিনেট করেছি। আমরা প্রায়ই জয়ের কাছাকাছি ছিলাম, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ফল আমাদের বিপক্ষে চলে গেছে। তারপর অবশ্য দ্বিতীয়

ম্যাচে আমরা লড়াই করতে পারিনি। কারণ আমার মতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্তটি ভুল ছিল।’তিনি আরও বলেন, ‘শেষ ম্যাচটা আল্লাহর রহমতে আমরা ওয়ানডেতে যেমন দল, ঠিক সেভাবেই জিতেছি। সাকিব তো কেমন করল সেটা

তো দেখলেনই। এছাড়া আরও কয়েকজন খেলোয়াড় পারফর্ম করলে ম্যাচে জয় পাওয়াটা সহজ হয়ে যায়। সেজন্য সাকিব, তামিম, মুশফিক বা শান্ত; এদের পারফর্ম করা গুরুত্বপূর্ণ। সিরিজ হারলেও আমাদের ওয়ানডে দলটা খুবই ভালো।

আমরা এটাতে ভালো করছি। সিরিজে দুটো ম্যাচ আমরা খুবই ভালো খেলেছি।’চলতি বছরের শেষে ভারত বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে এই সিরিজটা মোটামুটি ভালো হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন আকরাম খান, ‘প্রস্তুতি হিসেবে যদি বলেন

ভালোই হয়েছে। গেল ৮/৯ বছর কিন্তু আমরা ওয়ানডেতে ভালো করছি। তবে এই সিরিজে লিটন-তামিম রান করতে পারেনি। তামিম মনে হয় একটু প্রেশারে ছিল। লিটন থেকে সবসময় ভালো কিছুরই প্রত্যাশা করি। বিশ্বকাপেও আমাদের মতোই

উইকেট পাব, তাই সেখানেও আমরা ভালো করার ব্যাপারে আশাবাদী। তবে সেখানে বোলিং-ব্যাটিংয়ের সঙ্গে ফিল্ডিংটাও ভালো হতে হবে।’ইংল্যান্ড সিরিজ নিয়ে বিসিবি নির্বাচক ও সাবেক ক্রিকেটার আব্দুর রাজ্জাক ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘সিরিজটা

মোটামুটি ভালো গেছে, খারাপ বলব না। শেষ ম্যাচটা যদি দেখেন, খুবই ডমিনেট করেছি বলেই আমরা জিতেছি। সবমিলিয়ে ক্রিকেটাররা সিরিজটা ভালো খেলেছে।’এর আগে ২০১৬ সালের বাংলাদেশের সঙ্গে সিরিজ খেলেছিল ইংলিশরা। সেবারও

ইংল্যান্ড টাইগারদের ২-১ ব্যবধানে সিরিজে হারিয়েছে। ওই সিরিজে বাংলাদেশ দলে ছিলেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর আর তাকে জাতীয় দলে দেখা যায়নি। তবে দলের বাইরে থেকে চলমান সিরিজ

নিয়ে তিনি ঢাকা পোস্টের সঙ্গে কথা বলেছেন। এই মিডল অর্ডার ব্যাটার বলছেন, ‘যদি বিশ্বকাপ প্রস্তুতির কথা বলেন তাহলে আমি বলব খুবই ভালোভাবে শুরু করেছে। যদিও দুটো ম্যাচ আমরা হেরেছি, তবে বুঝতে হবে ইংল্যান্ড কিন্তু বিশ্বচ্যাম্পিয়ন

দল। ওদের বিপক্ষে খেলাটা সহজ না। তারা যে কোনো দলের বিপক্ষে সবসময় শক্ত একটা প্রতিপক্ষ। অবশ্য আমাদের কিছু ভুল ছিল, যেগুলো ঠিক করতে পারলে সিরিজ জিততে পারতাম। তবে দুর্ভাগ্যজনক সেটি হয়নি আর কি।’

এই সিরিজে ব্যাটারদের পারফরম্যান্স নিয়ে তিনি বলছেন, ‘যারা দলে আছেন, তারা সবাই জানেন দলে তাদের কাজ কী এবং কী করতে হবে। তাদের সবারই ক্লিয়ার একটা ধারণা রয়েছে। সেজন্য আশা করি তারা খুব তাড়াতাড়ি সেখান থেকে

রিকোভার করবে। তবে সাকিব ভাইকে নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। যত বলব কম হয়ে যাবে। উনি আমার কাছে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন।’সাকিব নিজেই দলের জন্য অনুপ্রেরণা উল্লেখ করে সৈকত বলেন, ‘উনি আলাদা করে যে কাউকে অনুপ্রেরণা

যোগান এমন না। পুরো দলটকেই তিনি সব সময় মোটিভেট করার চেষ্টা করেন। কেবল জুনিয়রই নয়, যারা উনার সঙ্গে অনেক বছর ধরে খেলছেন তারাও সাকিব ভাইয়ের সাথে অনেক ফ্রি। উভয়ের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে ভালো আলোচনা হয়। তিনি সব সময় দলের ভালোটাই চান। একইসঙ্গে সতীর্থদের ও দলের জন্য যতটুকু অনুপ্রেরণা প্রয়োজন তিনি সেটা দেন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *